২/২, ব্লক-এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা
৮৮০-২-৮৮০-২-৯১১

আন্তর্জাতিক নারী দিবস-২০১৬ উদ্‌যাপন

র‌্যালি, আলোচনা সভা, সম্মাননা প্রদান ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে
জাতীয় কন্যাশিশু এডভোকেসি ফোরাম-এর উদ্যোগে আন-র্জাতিক নারী দিবস-২০১৬ উদ্‌যাপন

????????????????????????????????????

‘২০৩০ এর অঙ্গীকার, নারী-পুরুষের সমতার’- এই শ্লোগানকে সামনে রেখে ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে জাতীয় কন্যাশিশু এডভোকেসি ফোরাম-এর উদ্যোগে উদ্‌যাপিত হলো আন-র্জাতিক নারী দিবস-২০১৬। এ উপলক্ষে ০৯ মার্চ, ২০১৬ সকাল ৮.৩০টায় টিএসসি মোড়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলাদেশ শিশু একাডেমী, ঢাকা পর্যন- এক র‌্যালি এবং র‌্যালি শেষে সকাল ১০:০০টায় শিশু একাডেমী-এর অডিটোরিয়ামে এক আলোচনা সভা, সম্মাননা প্রদান এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপসি’ত ছিলেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জনাব মেহের আফরোজ চুমকি এমপি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপসি’ত ছিলেন ড. মিজানুর রহমান- চেয়ারম্যান, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপসি’ত ছিলেন জনাব মোশাররফ হোসেন- পরিচালক, বাংলাদেশ শিশু একাডেমি, ঢাকা এবং অধ্যাপক ইফ্‌ফাত আরা নার্গিস- সহ-সমপাদক, জাতীয় কন্যাশিশু এডভোকেসি ফোরাম ও সাবেক মহাপরিচালক, জাতীয় শিক্ষা ব্যবস’াপনা একাডেমী (নায়েম)।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেহের আফরোজ চুমকি বলেন, ‘শত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও বাংলাদেশের নারীরা এগিয়ে যাচ্ছে। তারা তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন হয়ে উঠছেন। আজকের আমাদের নারীরা তাদের যোগ্যতাবলে রাজনীতিতে, সচিবালয়ে, এমনকি এভারেস্টের চূড়ায় আরোহণ করেছে। বেগম রোকেয়া বেঁচে থাকলে নারীদের এ উন্নতি দেখে তিনি বিস্মিত হতেন।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ৪৪ শতাংশ শিশু, যাদের অর্ধেকই কন্যাশিশু। জাতি হিসেবে এগিয়ে যাওয়ার জন্য তাদেরকে বিশেষ করে কিশোরীদের প্রতি আমাদের যত্নবান হতে হবে। কারণ তারা এ সময় বাল্যবিবাহের শিকার হয় এবং অনেকে স্কুল থেকে ঝরে পড়ে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি, নারী-পুরুষের মর্যাদা হতে হবে সমান-সমান। এজন্য নারীদেরকে যোগ্য হয়ে উঠতে হবে।’

ড. মিজানুর রহমান বলেন, ‘একটি সমাজ কতটা এগিয়েছে তা বোঝা যায় সে দেশের নারীরা কতটা এগিয়েছে। তাই জাতির সমৃদ্ধির জন্য নারীদের এগিয়ে নিতে হবে। কোনো ধর্মেই নারীর প্রতি বৈষম্য করার কথা বলা হয়নি। কিন’ সমাজ বৈষম্য তৈরি করেছে। আমরা এমন একটি রাষ্ট্র চাই যেখানে নারী-পুরুষের মধ্যে কোনো প্রকার বৈষম্য থাকবে না। এজন্য নারী ও কন্যাশিশুদের জন্য মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে এবং শিক্ষাক্ষেত্রে দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে।’

মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়নে ইতিবাচক অর্জন পরিলক্ষিত হচ্ছে। এর মাধ্যমে নারীর প্রতি বৈষম্য কমে আসছে।’ তিনি বলেন, ‘সামপ্রতিক সময়ে শিশু হত্যার পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে। এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা দরকার।’

অধ্যাপক ইফ্‌ফাত আরা নার্গিস বলেন, ‘কন্যাশিশুদের এগিয়ে নেয়ার জন্য পরিবারের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি। এর পাশাপাশি কন্যাশিশুদের অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে সমাজ ও রাষ্ট্রের দায়িত্ব রয়েছে। আমরা এমডিজি অর্জনের মাধ্যমে সফলতা অর্জন করেছি। ভবিষ্যতে নারী-পুরুষ সবার সম্মিলিত ভূমিকার মাধ্যমে এসডিজি অর্জনেও আমরা সফল হবো বলে বিশ্বাস করি।’

অনুষ্ঠানের শুরুতে দেয়া স্বাগত বক্তব্যে ফোরাম-এর সম্পাদক নাছিমা আক্তার জলি বলেন, ‘নারীর সার্বিক উন্নয়নে ভাল করছে বাংলাদেশ। এমডিজি’র ৫২ লক্ষ্যের মধ্যে ১৯টি অর্জনে সফল হয়েছে। এই অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে হলে নারী নির্যাতন বন্ধ করতে হবে এবং নারী তথা কন্যাশিশুদের বিকশিত হওয়ার পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। আরও দরকার নারীর প্রতি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন।’ বিয়ের ক্ষেত্রে মেয়েদের বয়স নূন্যতম ১৮ বছর বহাল রেখে দ্রুত বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন পাশ করা দরকার বলে মন-ব্য করেন তিনি।

সভাপতির বক্তব্যে শাহীন আক্তার ডলি বলেন, ‘নারী-পুরুষের সমকক্ষতা অর্জনের জন্য নারীদেরকে যোগ্য হয়ে উঠতে হবে। তবে নারীদের জন্য সম-সুযোগ তৈরি করার ক্ষেত্রে সমাজ ও রাষ্ট্রকে দায়িত্ব নিতে হবে। আমরা যদি কন্যাশিশুদের জন্য শিক্ষা ও পুষ্টি নিশ্চিত করতে পারি তাহলে তারা যোগ্য নাগরিক হয়ে উঠবে এবং এর মাধ্যমে জাতি হিসেবে আমরা এগিয়ে যাবো।’

অনুষ্ঠানের বিশেষ পর্বে তিনজন ব্যক্তিত্ব ভাষা সৈনিক অধ্যাপক শরীফা খাতুন, মুক্তিযোদ্ধা জনাব শিরিন বানু মিতিল এবং এসএ গেমসে দুটো স্বর্ণপদক বিজয়ী ক্রীড়া তারকা জনাব মাহফুজা খাতুন শিলা’-কে সম্মাননা প্রদান করা হয়। একই অনুষ্ঠানে ‘নারীর কথা-১১’ নামক একটি জার্নাল-এর মোড়ক উন্মোচন করা হয়।