
কোভিড-১৯ এবং বাল্য ও জোরপূর্বক বিয়ে: পরামর্শপত্র
এপ্রিল ২০২০
ইউনেস্কোর তথ্য মতে, ২০২০ সালের মার্চের শেষ নাগাদ বিশ্বের ১৮০টি দেশ তাদের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছে। বিশ্বের মোট শিক্ষার্থীর ৮৭ শতাংশের ওপর কোন না কোন ভাবে এর প্রভাব পড়েছে। জরুরি মানবিক পরিস্থিতিতে যখন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকে তখন কন্যাশিশুদের প্রতি যৌন নিপীড়ন ও হয়রানি বৃদ্ধি পায় এবং তাদের বাল্যবিয়ের ঝুঁকিও বেড়ে যায়।
করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে সরকারি ছুটির মধ্যে বেড়েছে নারী নির্যাতন। মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের এক জরিপ বলছে, শুধু এপ্রিল মাসেই দেশে ৪২৪৯ নারী পারিবারিক সহিংসতার শিকার হয়েছেন।
তাদের মধ্যে ৮৪৮ জন শারীরিক নির্যাতন, প্রায় ২ হাজার নারী মানসিক নির্যাতন ও ১৩০৮ জন অর্থনৈতিক নির্যাতনের (খাদ্য ও অর্থাভাব) শিকার হয়েছেন।
এছাড়াও যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছেন ৮৫ জন। এ সময়ে ৩৩টি বাল্যবিয়ের ঘটনা ঘটেছে। বিস্তারিত
গত ৯ এপ্রিল থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত দেশে মোট ৫২ জন শিশু এই ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া ওই সময়ের মধ্যে ২৭ জন শিশু করোনা ভাইরাসের লক্ষণ নিয়ে মারা গিয়েছে কিন্তু মৃত্যুর কারণ পরীক্ষা করা হয় নি। অর্থাৎ, মোট ৩৩ জন শিশু মারা গিয়েছে যাদের মধ্যে ৬ জন রিপোর্টেড করোনা ভাইরাস রোগী ছিলেন এবং অবশিস্ট ২৭ জন ছিলেন এই রোগের লক্ষণ নিয়ে মারা যাওয়া রোগী। এদিকে ২৪ জন শিশুর করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে কিন্তু এর ফল প্রকাশিত হয়নি। বিস্তারিত
গবেষণায় বলা হয়, পুষ্টিহীনতার ভয়াবহ রূপ পাঁচ বছরের কম বয়সীদের মৃত্যুর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ কারণ হতে পারে।
ইউনিসেফ জানায়, কোভিড-১৯ মহামারির কারণে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়ায় এবং নিয়মিত পরিষেবা ব্যাহত হওয়ার ফলে আগামী ছয় মাসে প্রতিরোধযোগ্য রোগে বিশ্বব্যাপী প্রতিদিন অতিরিক্ত ৬ হাজার শিশু মারা যেতে পারে।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাস মহামারির কারণে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে গুরুতর স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণের পরিমাণ অনেকাংশে কমে গেছে। বিস্তারিত
করোনাকালে মাদকের ব্যবহার বৃদ্ধি ও পারিবারিক নির্যাতন বেড়েছে। নারী ও শিশু নির্যাতন বেড়েছে ৬৫ শতাংশ। যৌথ পর্যবেক্ষণের এক প্রতিবেদনে এমনই তথ্য প্রকাশ করেছে স্টেপস ও গ্যাড অ্যালায়েন্স। এ বিষয়ে মঙ্গলবার (১৯ মে) গণমাধ্যমে যৌথ সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠায় সংগঠন দুটি।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তি বলা হয়, ইয়ুথ ভলান্টিয়ার গ্রুপের সদস্যরা পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে দেখতে পায় ৭ হাজার পরিবারের মধ্যে ৪ হাজার ৫৫০টি পরিবারে নারী ও শিশু নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। এর মধ্যে বেশিরভাগই শ্রমজীবী, নিম্নবিত্ত এবং মধ্যবিত্ত পরিবার। উল্লিখিত পরিবারের মধ্যে প্রায় ৬৫ শতাংশ পরিবারের নারী ও শিশুরা বিভিন্ন ধরনের মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। পরিবারগুলোতে এ ধরনের ঘটনা ক্রমাশ বাড়ছে। বিস্তারিত
করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতেও থেমে নেই নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা, ধর্ষণ ও নির্যাতনের ঘটনা। চলতি বছরের গত মার্চ, এপ্রিল ও মে- এই তিন মাসে ৪৮০ জন নারী ও শিশু বিভিন্নভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। তাদের মধ্যে ২৬৭ জন নারী ও ২১৩ জন শিশু। এর মধ্যে ২০৬ ঘটনায় ৯০ নারী ও ১১৬ শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে।
নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা ও ধর্ষণের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। ১৪টি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতার ঘটনা বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য জানিয়েছে সংগঠনটি।