২/২, ব্লক-এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা
৮৮০-২-৮৮০-২-৯১১

জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম-এর উদ্যোগে আন্তর্জাতিক নারী দিবস-২০১৮ উদ্‌যাপন

‘বদলে দেবার সময় এখন, গ্রাম-শহরের নারীর জীবন’- এই স্লোগানকে সামনে রেখে ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম-এর উদ্যোগে উদ্‌যাপিত হলো আন্তর্জাতিক নারী দিবস-২০১৮। এ উপলক্ষে ০৯ মার্চ, ২০১৮ সকাল ৮.৩০টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকা থেকে থেকে বাংলাদেশ শিশু একাডেমী পর্যন্ত এক র‌্যালি এবং র‌্যালি শেষে সকাল ১০:০০টায় বাংলাদেশ শিশু একাডেমী-এর অডিটোরিয়ামে এক আলোচনা সভা, সম্মাননা প্রদান এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

র‌্যালির উদ্বোধন ঘোষণা করেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জনাব মেহের আফরোজ চুমকি এমপি। ব্যানার, প্লাকার্ড নিয়ে ৩৬টি সংগঠন থেকে আগত প্রায় এক হাজার নারী-পুরুষ র‌্যালিতে অংশগ্রহণ করেন।

আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব কাজী রোজী এমপি। সূচনা বক্তব্য দেন জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম-এর সম্পাদক নাছিমা আক্তার জলি। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নারীমেত্রীর নির্বাহী পরিচালক জনাব শাহীন আক্তার ডলি।

স্ব-স্ব ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের রাখার জন্য অনুষ্ঠানে ড. মেহতাব খানম (চেয়ারম্যান, ডিপার্টমেন্ট অব অ্যাডুকেশনাল অ্যান্ড কাউন্সিলিং সাইকোলজি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়) এবং জনাব নাজমা আক্তার-কে (প্রযোজক, সোনালী দিন, এটিএন বাংলা) সম্মাননা প্রদান করা হয়। একই অনুষ্ঠানে তৃণমূলের ২৪ নারীর সফলতার গল্প নিয়ে প্রকাশিত ‘নারীর কথা-১৩’ নামক একটি প্রকাশনার মোড়ক উন্মোচন করা হয়। অনুষ্ঠানের শেষভাগে শিশু-কিশোরদের অংশগ্রহণে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।

আলোচনায় অংশ নিয়ে জনাব মেহের আফরোজ চুমকি এমপি বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের স্রোতধারায়। নারীরাও এই উন্নয়নের অংশীদার।’ তিনি বলেন, ‘দেশে অর্ধেক জনগোষ্ঠী হলো নারী। আবার নারীদের মধ্যে অর্ধেক কন্যাশিশু। তাই কন্যাশিশুরা আমাদের সম্পদ। এই কন্যাশিশুরা অল্প বয়সে বাল্যবিবাহের শিকার হয়ে আরেকজন শিশু কোলে নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে-আমরা এমন দৃশ্য দেখতে চাই না।’

অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে মাননীয় প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা কন্যাশিশুদের নিয়ে স্বপ্ন দেখুন। তারা অবশ্যই আপনাদের সেই স্বপ্ন পূরণ করবে।’ সরকার নারী ও কন্যাশিশুদের কল্যাণে যেসব পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করছে তার একটি বিবরণ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন সংস্থা বাংলাদেশে বাল্যবিবাহের হার বেশি দেখালেও বিগত যে কোনো সময়ের তুলনায় বর্তমানে বাল্যবিবাহের হার অনেক কম। কারণ বাল্যবিবাহ বন্ধে সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা কাজ করছে। আমাদের কিশোরীরা এখন আগের তুলনায় অনেক সচেতন।’

জনাব কাজী রোজী এমপি বলেন, ‘শিশু শুধু শিশু নয়, তারা অনেক কিছু। কারণ আমাদের শিশুরাই আগামী দিনের নাগরিক, আমাদের কন্যাশিশুরাই আগামী দিনের নারী কিংবা মা। তাই শিশুরাই দেশের সম্পদ ও ভবিষ্যৎ।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের নারীরা দেশের সব জায়গায় আছে। কিন্তু নারীদের আরও এগিয়ে যেতে হবে। এজন্য নিজেকে যোগ্য ও দক্ষ করে তুলতে হবে। নারী ও কন্যাশিশুদের অনুধাবন করতে হবে- তুমি শক্তি, তুমিই বল, তুমিই কর্মফল।’

সূচনা বক্তব্যে জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম-এর সম্পাদক নাছিমা আক্তার জলি বলেন, ‘আমরা যদি নারীর জীবন বদলে দিতে চাই, তাহলে কন্যাশিশুদের জীবন বদলে দিতে হবে। কারণ কন্যাশিশুর মধ্য দিয়েই একজন নারীর জীবনের যাত্রা শুরু হয়। তাই কন্যাশিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টির অধিকার নিশ্চিত করতে হবে এবং বিরাজমান পুরুষতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গির অবসান ঘটাতে হবে।’

সভাপতির বক্তব্যে জনাব শাহীন আক্তার ডলি বলেন, ‘আমাদের নারীরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নতি করলেও তারা এখনো বিভিন্নভাবে নির্যাতনের শিকার। নারীদের প্রতি এই নির্যাতন আমরা মেনে নিতে পারি না।’ তিনি বলেন, ‘নারী-পুরুষ সমান্তরালে এগুলেই সমাজ ও রাষ্ট্র এগিয়ে যায়।’