
জাতীয় কন্যাশিশু দিবস-২০২২ উপলক্ষে বাংলাদেশ শিশু একাডেমি ও জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম-এর যৌথ আয়োজনে আজ মঙ্গলবার, ০৪ অক্টোবর ২০২২ সকাল ১০:০০টায় বাংলাদেশ শিশু একাডেমি মিলনায়তনে আলোচনা সভা, পুরস্কার বিতরণ এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জনাব ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা, এমপি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব জনাব মো: হাসানুজ্জামান কলোল, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জনাব ফরিদা পারভীন, বাংলাদেশ শিশু একাডেমির চেয়ারম্যান জনাব লাকী ইনাম, বাংলাদেশ শিশু একাডেমির মহাপরিচালক (অতিরক্ত সচিব) জনাব শরিফুল ইসলাম, জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের সহস¤পাদক জনাব রাবেয়া বেগম। আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের স¤পাদক জনাব নাছিমা আক্তার জলি। এছাড়া রুম টুরিডের সামিহা জাহান সারা, গুড নেইবারস বাংলাদেশের ফারহানা খাতুন, এডুকো বাংলাদেশের তাবাসসুম আক্তার এবং একশন এইড বাংলাদেশের নান্দিবা আক্তার হাফসা তাদের অনুভ‚তি ব্যক্ত করেন।
ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা বলেন, বঙ্গবন্ধু সবসময় শিশুদের কথা ভাবতেন। তিনি উপলদ্ধি করেছিলেন শিশুরাই দেশের ভবিষ্যৎ। তাই ১৯৭৪ সালেই তিনি শিশু আইন প্রণয়ন করেছিলেন। তাঁর সুযোগ্যা কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নারী ক্ষমতায়নের রোল মডেল। বাল্যবিয়ে একটি সামাজিক ব্যাধি। ২০৪০ সালের মধ্যে বাল্যবিয়ে শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে সরকার বদ্ধ পরিকর। করোনার সময় বাল্যবিয়ের প্রকোপ একটু বেড়ে গেলেও এখন আবার কমে এসেছে। আমরা ইচ্ছে করলেই বাল্যবিয়ে পুরোপুরি রোধ করতে পারব। হাজার হাজার সংগঠন কন্যাশিশুর অধিকার রক্ষায় কাজ করছে, তারপরও আমরা বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ করতে পারবো না কেন? এজন্য সরকারের সাথে সাথে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে একযোগে কাজ করতে হবে।
লাকী ইনাম বলেন, কন্যাশিশুরাই আগামী দিনের আলোকিত বাংলাদেশ গড়বে, তাই তাদের প্রতি অধিকতর যতœবান হতে হবে। একসময় কন্যা শিশুদের বাড়তি বোঝা হিসেবে দেখা হতো, তাদেরকে অল্প বয়সে বিয়ে দিয়ে দিত। কিন্তু আজকের বাংলাদেশের চিত্র পরিবর্তন হয়ে গেছে। কন্যারা আজকে অনেকে ক্ষেত্রেই অগ্রদূতের ভ‚মিকা পালন করছে। কন্যাশিশু দিবস শুধু একটি দিবস উদযাপনের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে সারা বছরের কর্মকাণ্ডে কন্যাশিশুদের অধিকারের বিষয়ে আমাদের সচেতন থাকতে হবে।
কবি নজরুলের একটি কবিতার উদ্ধৃতি দিয়ে বক্তব্য শুরু করা জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের স¤পাদক জনাব নাছিমা আক্তার জলি বলেন, নিরাপদ পরিবেশ ও বিনিয়োগ বাড়ালে কন্যারা সব কিছু পারে, তারা চ্যালেঞ্জ নিতে পারে। ফোরামের উদ্যোগে ২০০০ সাল থেকে কন্যাশিশু দিবস পালন করা হচ্ছে। আমাদেও বর্তমান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কন্যাশিশুদের অধিকার ও সুযোগ সুবিধা নিশ্চিতে বিভিন্ন ইতিবাচক উদ্যোগ গ্রহণ করে যাচ্ছেন। কিন্তু তারপরও আমাদের কন্যাশিশুদের সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে। আমাদের মননে ধারণ করতে হবে, বিশ্বাস করতে হবে যে আমরা আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন দেখতে পারি। তাহলে আমরা যে কোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে সামনে এগয়ে যেতে পারব।
ফরিদা পারভীন বলেন, কন্যাশিশুর শিক্ষা, পুষ্টি, সুরক্ষা ইত্যাদি নিশ্চিতে বিভিন্ন আইন নীতিমালা ও কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নে কাজ করে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর। শিশুদের অধিকার নিশ্চিতে অভিভাবকদের আরো সচেতন হতে হবে, বিশেষ করে শিশুদের কথা বেশি বেশি শুনতে হবে।
শরিফুল ইসলাম বলেন, কন্যাশিশুরা আমাদের স¤পদ, তাদেরকে সঠিকভাবে ব্যবহার করতে হবে। যারা দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠীকে পিছিয়ে রাখতে চায় তারা আসলে সমাজকেই পিছিয়ে রাখতে চায়। এদের ব্যাপারে সজাগ থাকতে হবে।