২/২, ব্লক-এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা
৮৮০-২-৮৮০-২-৯১১

জাতীয় কন্যাশিশু দিবস-২০১৮ উদ্‌যাপন

‘আজকের শিশুরাই গড়ে তুলবে আগামীর সমৃদ্ধ বাংলাদেশ’: মেহের আফরোজ চুমকি এমপি

মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জনাব মেহের আফরোজ চুমকি এমপি বলেছেন, ‘বর্তমান সরকার দেশের সকল শিশু বিশেষ করে কন্যাশিশুদের অধিকার ও সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ। কারণ আমরা মনে করি, কন্যাশিশুরা সুরক্ষা ও অধিকার পেলে তারা শিক্ষিত, যোগ্য ও উপার্জন হয়ে গড়ে উঠতে পারবে। এর মাধ্যমে জাতি হিসেবে আমরা এগিয়ে যাবো।’  বাংলাদেশ শিশু একাডেমী ও জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম-এর যৌথ উদ্যোগে জাতীয় কন্যাশিশু দিবস-২০১৮ উদ্‌যাপন উপলক্ষে আয়োজিত র‌্যালি পূর্ব সমাবেশে মাননীয় মন্ত্রী উক্ত মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশের কাতারে প্রবেশ করেছে। আমরা চাই, শিশুরা শিক্ষিত ও যোগ্য হয়ে আগামীর সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলুক। আমরা শুধু দৃশ্যমান উন্নয়ন বিশেষ করে অবকাঠামো উন্নয়নেই গুরুত্ব দিতে চাই না, একইসঙ্গে মানব উন্নয়ন সূচক এবং নারী ও শিশুদের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্ব দিতে চাই।’ দিবসটি উদ্‌যাপন উপলক্ষে সকাল ০৮:৩০টায় টিএসসি মোড়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলাদেশ শিশু একাডেমী পর্যন্ত র‌্যালি বের করা হয়। কবুতর ও বেলুন উড়িয়ে র‌্যালির উদ্বোধন করেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জনাব মেহের আফরোজ চুমকি এমপি। র‌্যালির পর সকাল ১০:৩০টায় শিশু একাডেমী মিলনায়তনে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কাজী রোজী এমপি, জনাব আনজীর লিটন, পরিচালক, বাংলাদেশ শিশু একাডেমী, এবং কাজী কৃষ্ণকলি ইসলাম, বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব। স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন জনাব শাহীন আক্তার ডলি, সহ-সভাপতি, জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম ও নির্বাহী পরিচালক, নারীমৈত্রী। সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপসি’ত ছিলেন জনাব ওয়াহিদা বানু, নির্বাহী পরিচালক, অপরাজেয় বাংলাদেশ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ড. বদিউল আলম মজুমদার, সভাপতি, জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম।

ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘কাজী নজরুল ইসলামের ভাষায় আমি বলতে চাই, কন্যা তুমি তুচ্ছ নও, নও তুমি ক্ষুদ্র, যদি তুমি জেগে উঠো, তবে তুমি বিশ্বজয় করতে পারবে। এজন্য কোনো কিছু অর্জন করতে হলে তার জন্য প্রত্যাশা ও স্বপ্ন থাকতে হবে এবং স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য উদ্যোগী হতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘কন্যাশিশুদের বিকশিত করে তোলার জন্য রাষ্ট্রের ও সমাজের উচিৎ হবে তাদের জন্য সহায়ক পরিবেশ তৈরি করা এবং তাদের জন্য বিনিয়োগ বৃদ্ধি করা।’

কন্যাশিশুদের উদ্দেশ্যে আনজীর লিটন বলেন, ‘জীবনে ভয় পেলে চলবে না, সাহসিকতার সাথে এগিয়ে যেতে হবে এবং নিজেদেরকে সুরক্ষিত রাখতে হবে। একইসঙ্গে নিজেদেরকে যোগ্য করে তোলার জন্য প্রচুর বই পড়তে হবে। কারণ বই হলো জ্ঞানের আঁধার, বই মানুষের চিন্তার জগতকে আলোকিত করে।’ তিনি অনুষ্ঠানে তাঁর স্বরচিত ছড়া ‘আমি বাংলাদেশের মেয়ে’ পাঠ করে শোনান।

কাজী কৃষ্ণকলি ইসলাম বলেন, ‘আমি চাই শিশুরা কন্যাশিশু কিংবা ছেলেশিশু নয়, বরং মানুষ হিসেবে বেড়ে উঠুক। তাই শিশুদের স্বাভাবিকভাবে বেড়ে উঠার সুযোগ করে দেয়া দরকার।’ কন্যাশিশুদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘ছোট্ট একটা কাজও যদি ভালোভাবে করা যায়, তাহলে অনেক দূর যাওয়া যায়। জীবনে বড় হওয়ার জন্য জানার আগ্রহ থাকতে হবে এবং প্রশ্ন করার মানসিকতা থাকতে হবে।’

স্বাগত বক্তব্যে শাহীন আক্তার ডলি বলেন, ‘বাংলাদেশের জনসংখ্যার প্রায় তিন কোটি কন্যাশিশু। তারা নানান ধরনের বঞ্চনা ও বৈষম্যের শিকার হয়। আশার কথা হলো, সরকার কন্যাশিশুদের কল্যাণে নানামুখী পদক্ষেপ নিয়েছে। কন্যাশিশুরা এখন আর বোঝা নয়। তারা যেখানেই সুযোগ পাচ্ছে, সেখানেই তারা সফলতার স্বাক্ষর রাখছে।’ তিনি বলেন, ‘মানুষ হলো মানবসম্পদ। আর কন্যাশিশুরা হলো মানবসম্পদের অংকুর। তাই কন্যাশিশুরা সুরড়্গিত থাকলে দেশ আলোকিত হয়। আমরা চাই বছরের প্রত্যেকটি দিনই কন্যাশিশুরা সুরক্ষিত থাকুক।’

ওয়াহিদা বানু বলেন, ‘আমরা সবাই নারী-পুরুষের সমতা চাই। আমরা চাই আমাদের কন্যাশিশুদের সুরক্ষিত থাকুক। আমি মনে করি, নারী ও কন্যাশিশুদের অধিকার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে পুরুষদেরকে পাশে দাঁড়াতে হবে।’

অনুষ্ঠানে কন্যাশিশুদের মধ্য থেকে অনুভূতি ব্যক্ত করে কিশোরী বন্ধু সিলভিয়া হামিদ ও ঝুমা।

আলোচনার বিশেষ পর্বে ‘কন্যাশিশু-১৪’ নামক একটি প্রকাশনা ও দিবস উদযাপন উপলক্ষে প্রকাশিত পোস্টারের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। এছাড়া চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।