
মেয়েদের বিয়ের বয়স ১৮, বিশেষ ক্ষেত্রে ছাড়- এমন ‘বিশেষ বিধান’ রেখে ২৪ নভেম্বর ২০১৬ মন্ত্রিসভায় পাশ হয়েছে ‘বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন, ২০১৬’। উক্ত আইনের ১৯ ধারায় মেয়েদের বিয়ের বয়স ১৮ রাখা হলেও বিশেষ ক্ষেত্রে ‘সর্বোত্তম স্বার্থে’ আদালতের নির্দেশে এবং মা-বাবার সম্মতিতে যেকোনো অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়ের বিয়ে হতে পারবে বলে উল্লেখ করা হয়। তবে বিশেষ ক্ষেত্রে ১৮-এর নিচে কত বছর বয়সে বিয়ে হতে পারে, আইনে তা নির্দিষ্ট করে বলা হয়নি। সরকার সংসদের পরবর্তী কোনো অধিবেশনে উপরোক্ত বিধান রেখেই আইনটি পাশ করতে যাচ্ছে।
আইনের ১৯ ধারার অপব্যবহার হবে এবং দেশে বাড়বে বাল্যবিবাহের হার। তাই আইনে ‘১৮’র সাথে কোনো শর্ত নয়’- এমন দাবিতে জাতীয় কন্যাশিশু এডভোকেসি ফোরাম-এর উদ্যোগে সারাদেশে গণসমাবেশ, র্যালি, মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয়।
১৮ জানুয়ারি ২০১৭, রাজধানী ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গণসমাবেশ ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয়। এছাড়া একই দিন জেলা পর্যায়েও (রাজশাহী, নওগাঁ, নাটোর, জয়পুরহাট, চাপাইনবাবগঞ্জ, কুড়িগ্রাম, রংপুর, খুলনা, বাগেরহাট, ঝিনাইদহ, মেহেরপুর, যশোর, নেত্রকোনা, সুনামগঞ্জ) পালিত হয় মানববন্ধন, গণসমাবেশ ও বিক্ষোভ কর্মসূচি। এসব কর্মসূচিতে ছাত্র-শিক্ষক, জনপ্রতিনিধি, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, মানবাধিকারকর্মী এবং বিভিন্ন বেসরকারি উন্নয়ন সংস’ার প্রতিনিধি-সহ প্রায় ৬ হাজার ৫০০ জন নারী-পুরুষ অংশগ্রহণ করেন।
উক্ত মানববন্ধন ও গণসমাবেশ থেকে নিম্নোক্ত আওয়াজ তোলা হয়:
১. আইনে মেয়েদের বিয়ের বয়সের ক্ষেত্রে কোনো ‘বিশেষ বিধান রাখা যাবে না। কারণ এতে ১৩-১৪ বছরের কন্যাশিশুদের বিয়ে দেয়া প্রবণতা বেড়ে যাবে;
২. এই বিশেষ বিধানের সুযোগ নিয়ে ইভটিজার এবং ধর্ষকরা অভিভাবকদের ওপর চাপ প্রয়োগ করে অল্প বয়সী মেয়েদের বিয়ে দিতে বাধ্য করবে। তাই এমন বিধান রাখার কোনো যৌক্তিকতা নেই;
৩. কন্যাশিশুদের নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে সরকার ১৮’র নিচে বিয়ের বিশেষ বিধান রেখেছে। কিন’ এটি কোনো সমাধান নয়। কারণ এরফলে নিরাপত্তা নিশ্চিতের পরিবর্তে কন্যাশিশুরা শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়।
Recent Comments