২/২, ব্লক-এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা
৮৮০-২-৮৮০-২-৯১১

পার্লামেন্টারিয়ান ককাস অন চাইল্ড রাইটস কমিটির সাথে সকল ক্ষেত্রে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে পূর্ণাঙ্গ আইন প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তা শীর্ষক সভা

তারিখঃ ২০ নভেম্বর, ২০১৭
স্থানঃ আইপিডি মিলনায়তন, বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ ভবন

যৌথ আয়োজনঃ পার্লামেন্টারিয়ান ককাস অন চাইল্ড রাইটস এবং জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম
সহযোগিতায়ঃ গার্লস অ্যাডভোকেসি এ্যালায়েন্স, প্ল্যান ইন্ট্যারন্যাশনাল বাংলাদেশ।

প্রধান অতিথিঃ জনাব মোঃ ফজলে রাব্বী মিয়া, এমপি
মাননীয় ডেপুটি স্পিকার, বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ
সভাপতিঃ জনাব মীর শওকাত আলী বাদশা, এমপি
মাননীয় সভাপতি, পার্লামেন্টারিয়ান ককাস অন চাইল্ড রাইটস, বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ

স্বাগত বক্তব্য ও সারসংক্ষেপ উপস্থাপনঃ ড. বদিউল আলম মজুমদার, সভাপতি- জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম, গ্লোবাল ভাইস প্রেসিডেন্ট ও কান্ট্রি ডিরেক্টর, দি হাঙ্গার প্রজেক্ট
স্বাগত মন্তব্য উপস্থাপনঃ জনাব সৌম্য ব্রত গুহ, ডেপুটি কান্ট্রি ডিরেক্টর, প্ল্যান ইন্ট্যারন্যাশনাল বাংলাদেশ

অন্যান্য অতিথিঃ পার্লামেন্টারিয়ান ককাস অন চাইল্ড রাইটস এর সদস্য ১১ জন সংসদ সদস্য, ফোরাম কার্যনির্বাহী সদস্য ও ফোরাম এর কেন্দ্রিয় সদস্য এবং সিভিল সোসাইটি সদস্য।

সভার উদ্দেশ্যঃ
বাংলাদেশে নারী ও শিশুর জন্য নিরাপদ কর্মপরিবেশ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং উন্মুক্ত স্থানে চলাফেরার সামগ্রিক (হাট-বাজার, রাস্তা ও পরিবহণ) নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে যৌন হয়রানির বর্তমান পরিস্থিতি পর্যালোচনা এবং বিদ্যমান আইন ও নীতিমালার সীমাবদ্ধতাসমূহ বিশ্লেষণপূর্বক যৌনহয়রানি প্রতিরোধে একটি পূর্ণাঙ্গ আইন প্রণয়নের যৌক্তিকতা উপস্থাপন। যা, এখন পর্যন্ত আমাদের দেশে অবর্তমান।

মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে সকল ক্ষেত্রে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে পূর্ণাঙ্গ আইন প্রণয়ন।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনঃ
জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের সম্পাদক নাছিমা আক্তার জলি মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন। প্রবন্ধের শিরোনাম হলঃ
– বিগত কয়েক বছরের পরিসংখ্যান
– যৌন হয়রানি প্রতিরোধে বাংলাদেশ সরকারের উদ্যোগ
– হাইকোর্টের নির্দেশনা কি
– যৌন হয়রানির পরিস্থিতি পর্যালোচনা
– যৌন হয়রানি প্রতিরোধে আইন ও নির্দেশনার সীমাবদ্ধতা
– যৌন হয়রানি বন্ধে চাই পূর্ণাঙ্গ আইন

পূর্ণাঙ্গ আইন কেন জরুরীঃ
যৌন হয়রানি বিষয়ে একটি সমন্বিত আইন নারী ও কন্যাশিশুদের সকল ক্ষেত্রে চলাচলের জন্য একটি নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করবে, কন্যাশিশু ও নারীদের অভিগম্যতা বৃদ্ধি পাবে, নারী শিক্ষা নিশ্চিত হবে, কন্যাশিশুদের লেখাপড়া থেকে ঝরে পড়া ও বাল্যবিবাহ হ্রাস পাবে, কন্যাশিশু ও নারীরা আয়মূলক কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ত হবে। এসডিজি অর্জনে এই আইন সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করবে।

সভায় আইনটি প্রনয়নের যৌক্তিকতা তুলে ধরে আরও বেশকিছু সুপারিশ উপস্থাপনঃ
– যৌন হয়ারনি প্রতিরোধে শক্তিশালী রাজনৈতিক অঙ্গীকার প্রয়োজন। অপরাধ করে পার পেয়ে যাওয়ার প্রবণতাকে বন্ধ করতে হবে এবং অপরাধীকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেয়া থেকে বিরত থাকা;
– আইনের অষ্পতটা, ভয়ে মামলা না করা, ক্রটিপূর্ণ তদন্ত বিচারে দীর্ঘ প্রক্রিয়া, সামাজিক ও প্রশাসনের নির্লিপ্ততাসহ নানা কারণে যৌন নির্যাতন বন্ধ হচ্ছেনা। বিচারিক প্রক্রিয়ার সকল পুরুষতান্ত্রিক ফাঁক বা মানসিকতা বন্ধ করা;
– সমাজকে সুস্থ করতে, শিক্ষা, শ্রদ্ধা, সম্মান সর্বোপরি মানসিকতা ও দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের জন্য কাজ করতে হবে। স্কুলের পাশাপাশি পরিবার থেকেও সন্তানদেরকে নারীদের সম্মান করা শেখাতে হবে।
– গণমাধ্যমকে যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধিতে আরও বেশি কাজ করতে হবে
– আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেও যৌন হয়রানি মোকাবেলায় সক্ষম ও সংবেদনশীল করে তোলার পাশাপাশি জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে।

সভার তাৎক্ষনিক ফলাফলঃ
– সংসদ সদস্যগনের কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি পাওয়া। সদস্যগণ প্রত্যেকে স্ব স্ব নির্বাচনী এলাকায় যৌন হয়রানী বন্ধে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীসহ প্রতিটি স্টেকহোল্ডারকে জোড়ালো ভূমিকা পালনে বাধ্য করবেন।
– পূর্ণাঙ্গ যৌনহয়রানি প্রতিরোধ আইন প্রণয়ণ যে অত্যন্ত জরুরী – উপস্থিত সংসদ সদস্যগণ প্রত্যেকে তা অনুধাবন করে বক্তব্য দিয়েছেন। পূর্ণাঙ্গ আইন প্রনয়নের দাবী সংসদ সদস্যগন আগামী জানুয়ারী মাসের শীতকালীন সংসদ অধিবেশনে উপস্থাপনের প্রতিশ্রুতি প্রদান করেন।
– অতি দ্রুত এ সংক্রান্ত কার্যক্রম গ্রহণ করার জন্যে প্রধান অতিথি মাননীয় ডেপুটি স্পিকার পরামর্শ প্রদান করেন এবং ককাস এর সভাপতিকে জরুরী ভিত্তিতে কার্যকরী কমিটির সদস্য ও যৌন হয়রানি প্রতিরোধে কর্মরত সক্রিয় সদস্যদের উপস্থিতিতে সভা আয়োজনের আহবান জানান।
-খসড়া আ্ইনটি সংসদে উপস্থাপনের সঙ্গে সঙ্গে সংসদে তা পাশ করানোর প্রতিশ্রুতি মাননীয় ডেপুটি স্পিকারএর কাছ থেকে পাওয়া।

অতি দ্রুত আইনটি পাশ করানোর লক্ষ্যে প্রধান অতিথি কর্তৃক প্রয়োজনীয় পরামর্শঃ
– অতিদ্রুত সংশ্লিষ্ট সকল মন্ত্রণালয় এর দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, যেমন: সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়, আইন মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ বেশকিছু মন্ত্রণালয় এবং এ সংশ্লিষ্ট বেশকিছু সংসদীয় কমিটির প্রধানদের সমন্বয়ে একটি ফলপ্রসূ সভা আয়োজনের উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্য সংসদীয় ককাস অন চাইল্ড রাইটস কমিটির সভাপতি এবং জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামকে পরামর্শ প্রদান।
– কোন মন্ত্রণালয়ের অধীনে আইনটি পাশ করা যাবে, তা উক্ত সভা থেকে বের করে আনা।
– অতি দ্রুত পাশ করানোর লক্ষ্যে আইনের একটি খসড়া তৈরি করা, প্রয়োজনে ২০১০ সালে আইন কমিশনে দাখিলকৃত খসড়াটি (রিপোর্ট নং ১০০ ও ১০১) সংশোধন ও সংযোজন করে চূড়ান্ত খসড়া তৈরী এবং আগামী জানুয়ারী ২০১৮ এর সংসদ অধিবেশনে পাশ করানের জন্য উপস্থাপনের দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ ।

সর্বোপরি, প্রধান অতিথি মাননীয় ডেপুটি স্পিকার, অদ্যকার সভার সভাপতি ও পার্লামেন্টারিয়ান ককাস অন চাইল্ড রাইটস কমিটির চেয়ারপার্সনকে উদ্দেশ্য করে প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করে বলেন, আগামী জানুয়ারী ২০১৮ এর শীতকালীন অধিবেশনে সংসদে এই আইনটি উত্থাপিত হলে, পাশ করানোর শতভাগ প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি।

পরবর্তী করণীয়ঃ
– একটি পূর্ণাঙ্গ খসড়া আইন তৈরি করা
– আগামী শীতকালীন সংসদ অধিবেশনের সময় খসড়া পূর্ণাঙ্গ আইনটি হস্তান্তর করা
– পার্লামেন্টারিয়ান ককাস অন চাইল্ড রাইটস এর চেয়ারম্যানের মাধ্যমে আন্ত:মন্ত্রণালয়ের সভা আহ্বান করা এবং সেখানে খসড়া আইনটি উপস্থাপন করা
– সভা থেকে সকল ক্ষেত্রে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে পূর্ণাঙ্গ আইনটি সংসদে উত্থাপনের উপযোগী করা এবং কোন মন্ত্রণালয়ের অধিনে আইনটি হবে, তা সভা থেকে নির্দিষ্ট করা।
– সংসদ সদস্যগণ স্ব স্ব নির্বাচনি এলাকায় যৌন হয়রানি বন্ধে সংশ্লিষ্ট সকল প্রতিষ্ঠান এর সমন্বয়ে সক্রিয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন এবং সে বিষয়ে ফোরাম তাদের সাথে যৌথভাবে কাজ করা।