নিজস্ব প্রতিবেদক, রাঙামাটি | তারিখ: ২০-০৩-২০১৩
রাঙামাটি সদর উপজেলার জীবতলী চেয়ারম্যানপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে কয়েকজন ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ পাওয়া গেছে। সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির নেতারা গতকাল মঙ্গলবার অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার কথা নিশ্চিত করেছেন।রাঙামাটি সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি সুবিনয় চাকমা বলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীদের অভিভাবক, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কাছ থেকে একজন সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের যৌন হয়রানির অভিযোগ পাই। তাই উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার অনুমতি নিয়ে আজ (মঙ্গলবার) অভিযোগের সত্যতা যাচাই করতে গিয়ে ঘটনা সত্য বলে প্রমাণ পেয়েছি।’ বিষয়টি লিখিতভাবে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে দেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
তবে অভিযুক্ত শিক্ষক অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘ঘটনাটি এখনো আমি পুরোপুরি জানতে পারিনি। তবে এখানে কয়েকজনের কাছে আমার টাকা পাওনা আছে। সেই টাকা পেতে আমি স্থানীয় চেয়ারম্যানের কাছে অভিযোগ করেছি। এ কারণে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে বলে মনে করছি।’
কয়েকজন অভিভাবক অভিযোগ করেন, ওই শিক্ষক প্রায় সাত থেকে আট মাস ধরে কমপক্ষে পাঁচ-সাতজন শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানি করেছেন। কিন্তু শিক্ষার্থীরা ভয়ে অভিভাবকদের বলত না। পরে গত বৃহস্পতিবার এক শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির সময় তা অপর এক শিক্ষার্থীর চোখে পড়ে। ওই শিক্ষার্থী তার মাকে জানালে ঘটনা জানাজানি হয়ে যায়। এরপর শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে অভিভাবকেরা ঘটনা সম্পর্কে নিশ্চিত হন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বেবিলা দেওয়ান বলেন, ‘ওই শিক্ষক যে অনৈতিক কাজে ছাত্রীদের বাধ্য করেন, তা জানতাম না। মাত্র কয়েক দিন আগে অভিভাবকেরা আমাকেসহ শিক্ষক সমিতির কাছে ঘটনার বিষয়ে অভিযোগ করেন।’
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও গ্রামের প্রধান (কার্বারি) মিলন চাকমা বলেন, শিক্ষক সমিতির কাছে ছাত্রীরা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছে। বিষয়টি লিখিতভাবে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে জানানো হবে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ত্রিনয়ন চাকমা বলেন, ‘আমি মৌখিকভাবে অভিযোগ পেয়েছি। শিক্ষক সমিতিও সত্যতার প্রমাণ পেয়েছে। এখন হয়রানির শিকার ছাত্রীদের অভিভাবকেরা যদি লিখিত অভিযোগ করেন, তাহলে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
তথ্যসূত্র: প্রথমআলো, ২০ মার্চ ২০১৩
Recent Comments