
গত ০৬ জুলাই, ২০১৯ তারিখ ‘জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম’ এর উদ্যোগে এবং ‘মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন’-এর সহায়তায় তরুণদের সম্পৃক্ত করে সহিংস উগ্রবাদ প্রতিরোধের লক্ষ্যে ‘সম্প্রীতি’ প্রকল্পের অন-র্গত সহিংস উগ্রবাদ প্রতিরোধে তরুণ সমাবেশ নামে একটি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ইনিস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ-্এর কনফারেন্স রুমে সমাবেশ এর আয়োজন করা হয়। ‘সম্প্রীতি’ প্রকল্পের শিক্ষণ বিনিময়ের লক্ষ্যেই উক্ত অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় সংসদের ডেপুটি সিপকার অ্যাডভোকেট মো. ফজলে রাব্বী মিয়া এমপি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপসি’ত ছিলেন জনাব আরমা দত্ত এমপি, কো-চেয়ারম্যান, পার্লামেন্টারিয়ান ককাস অন চাইল্ড রাইটস ও ভাইস চেয়ারম্যান, প্রিপ ট্রাস্ট, জনাব শাহীন আনাম, নির্বাহী পরিচালক, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন এবং ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়-য়া, অ্যাডভোকেট, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট। সভাপতিত্ব করেন ড. বদিউল আলম মজুমদার, কান্ট্রি ডিরেক্টর, দি হাঙ্গার প্রজেক্ট ও সভাপতি, জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম।
এসডিজি অর্জনে সফলতা অর্জন করার জন্য সমাজের কাউকে পেছনে ফেলে রাখা যাবে না এবং জাতি-ধর্ম-বর্ণগত কারণে কারো প্রতি বৈষম্য করা যাবে না বলে মন-ব্য করেন সমাবেশের প্রধান অতিথি অ্যাডভোকেট মো. ফজলে রাব্বী মিয়া এমপি। তিনি আরও বলেন, তরুণদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ৬৬ তে ছয় দফা আন্দোলন, ৬৯ গণঅভ্যুত্থান এবং ৭০-এর নির্বাচনের মাধ্যমে আমরা দেশ স্বাধীন করেছি। সে সময়ও তরুণ সমাজ দেশ ও সমাজের কল্যাণে ভূমিকা পালন করে ইতিহাস সৃষ্টি করেছে। তখন তরুণরাই হাল ধরেছে। তাই তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, আজকের তরুণরাও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে সমপ্রীতির বার্তা ছড়িয়ে দিতে পারবে। বিশেষ অতিথি জনাব আরমা দত্ত এমপি বলেন, বর্তমানে একটি গোষ্ঠী তরুণদেরকে ভিন্ন পথে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছে। কিন’ তরুণরা যাতে বিপথে নিয়ে যেতে না পারে, সেবিষয়ে আমাদের সকলকে দায়িত্ব নিতে হবে। এক্ষেত্রে সবচেয়ে দায়িত্ব হলো পরিবারের। কারণ আমাদের পরিবার হলো আমাদের সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠান। তাই আমাদের সন-ানদের পারসপরিক সহমর্মিতা, শ্রদ্ধার শিক্ষা দিতে হবে। বিশেষ অতিথি মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক জনাব শাহীন আনাম বলেন, আমাদের তরুণরা দেশকে ভালোবাসে, তারা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চায়। কতিপয় মুষ্টিমেয় পথভ্রষ্ট তরুণের দায় তো সব তরুণরা নিতে পারে না। বিশেষ অতিথি ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়-য়া বলেন, প্রত্যেকটি মানুষই একটা বোমা, যদি না আমরা তাদেরকে ইতিবাচকভাবে ব্যবহার করি। সহিংসতা রোধের জন্য প্রথমত নিজের ভেতরকার কুপ্রবৃত্তিগুলো দমন করতে হবে। এর পাশাপাশি সমাজের প্রত্যেক মানুষকে সম্মান করা শিখতে হবে। উন্নয়ন করতে হলে সবাইকে একসাথে নিয়ে চলতে হবে, সবাইকে নিয়েই দেশ বদলাতে হবে। অপ্রাপ্তি-বঞ্চনা এবং ধর্মীয় ও সামাজিক কারণে জঙ্গিবাদের সৃষ্টি হয়। তাই সেদিকেও নজর দিতে হবে।
সমাবেশ সভাপতি ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, তরুণরা দুঃসাহসী, সৃজনশীল, কর্মক্ষম, উদ্যমী, তারা ঝুঁকি নিতে পারে। তরুণরা সমস্যা নয়, সমাধান। সুশিক্ষা ও মানসম্মত শিক্ষা দেওয়ার মাধ্যমে তাদেরকে মানবসমপদে পরিণত করা সম্ভব। তরুণরা যাতে মানবসমপদে পরিণত হতে পারে সেজন্য রাষ্ট্রকে প্রধানত দায়িত্ব নিতে হবে। এর পাশাপাশি পরিবারের দায়িত্ব হবে সন-ানদের যথাযথ খোঁজ-খবর রাখা।
অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের সমপাদক জনাব নাছিমা আক্তার জলি। অনুষ্ঠানে সমপ্রীতি প্রকল্পের আওতায় প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বেশ কয়েক তরুণ তাদের অভিজ্ঞতা বিনিময় করেন।