২/২, ব্লক-এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা
৮৮০-২-৮৮০-২-৯১১

জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম-এর উদ্যোগে আন্তর্জাতিক নারী দিবস’ ২০২২ পালিত

‘আন্তর্জাতিক নারী দিবস-২০২২ উপলক্ষ্যে জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম-এর উদ্যোগে ১৪ মার্চ আলোচনা সভা ও সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ১০:৩০টায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউট অব বাংলাদেশে অনুষ্ঠানটি শুরু হয়।

দি হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ও গ্লোবাল ভাইস প্রেসিডেন্ট ড. বদিউল আলম মজুমদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভাটিতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এনজিও বিষয়ক ব্যুরোর মহাপরিচালক (গ্রেড-১) জনাব কে.এম. তারিকুল ইসলাম এবং মানবাধিকার ও উন্নয়নকর্মী জনাব শীপা হাফিজা। স্বাগত বক্তব্য রাখেন জনাব নাছিমা আক্তার জলি, স¤পাদক, জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম। অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত থাকবেন ডা. এহছান হক, প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক, ডিস্টেট চিল্ড্রেনস এন্ড ইনফ্যান্টস ইন্টারন্যাশনাল; জনাব মাঈনুদ্দীন মাইনুল- কান্ট্রি ডিরেক্টর, গুডনেইবারস বাংলাদেশ; জনাব রাবেয়া বেগম, সহস¤পাদক , জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম ও নির্বাহী পরিচালক, এসডিএস। সমবেত কন্ঠে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। অনুষ্ঠানে ফোরামের পক্ষ থেকে দি ডেইলি স্টারের সাংবাদিক জনাব নীলিমা জাহান এবং দেশের থার্ড জেন্ডার স¤প্রদায় থেকে নির্বাচিত দেশের প্রথম চেয়ারম্যান জনাব নজরুল ইসলাম রীতুকে সম্মাননা প্রদান করা হয়। এছাড়া জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম কর্তৃক প্রকাশিত ‘নারীর কথা’ ম্যাগাজিনের মোড়ক উম্মোচন করা হয়।
কে.এম. তারিকুল ইসলাম বলেন, জেন্ডার সমতা মানে হলো নারী-পুরুষের স্বাধীনভাবে বিকাশে লাভের সুযোগ সৃষ্টি করা, নারীদের কাজের স্বীকৃতি ও যথার্থ মূল্যায়ন। এওসব বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যেই আজকের এই অনুষ্ঠান। বাংলাদেশের সংবিধানেও সর্বস্তরে নারী-পুরুষের সমতা নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে। সংবিধানের এই অধিকার বাস্তবায়নের জন্য বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশনেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার কাজ করে চলেছে। নারীদের প্রকৃত উন্নয়নের জন্য নারী দিবসকে কেবল আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে সীমিত না রেখে প্রত্যেককে প্রত্যেকের জায়গা থেকে দায়িত্ব নিয়ে কাজ করে যেতে হবে।
নাছিমা আক্তার জলি বলেন, এ বছর নারী দিবসের প্রতিপাদ্য হল: টেকসই আগামীর জন্য, জেন্ডার সমতাই অগ্রগণ্য। এই প্রতিপাদ্য শুধু একদিনের বিষয় নয়, প্রতিদিনই এটি জরুরি। আমাদের এই প্রতিপাদ্য ধারণ করতে হবে, চর্চার মধ্যে প্রতিফলিত করতে হবে হবে। ধারণ করতে না পারলে, লালন করতে না পারলে খুব বেশি প্রভাব ফেলতে পারবে না। ভাষা আন্দোলন শুরু করে স্বাধীনতা আন্দোলন – সব ক্ষেত্রে নারীদের অনেক অবদান ছিল। বর্তমানেও নারীরা দেশের উন্নয়নে অবদান রেখে চলেছে। কিন্তু আমাদের আরও অনেক দূর যেতে হবে।

রাবেয়া বেগম বলেন, এত কিছুর পরেও বাল্যবিয়ে নামক মহামারী রোধ করা যাচ্ছে না। এই মহামারী রুখতে হলে আমাদের নতুন করে কাজ করতে হবে। কন্যাশিশুদের সচেতন এবং নিজেদের লক্ষ্য স্থির হবে; বাল্যবিয়ের কুফল স¤পর্কে বাবা-মাকে বোঝাতে হবে।

ডা. এহছান হক বলেন, সরকার এবং ফোরামের মত প্রতিষ্ঠানের ভ‚মিকার কারণেই নারীদের আজকে এত উন্নতি হচ্ছে। কিন্তু একটা বিষয় হলো গৃহস্থালী কাজে নারীর ভ‚মিকা স্বীকৃতি পাচ্ছে না। ছোটবেলা থেকেই নিজেদের অধিকার স¤পর্কে সচেতন করে তুলতে হবে।

মাঈনুদ্দীন মাইনুল বলেন, জেন্ডার সমতা নিশ্চিত করতে না পারলে টেকসই উন্নয়ন সম্ভব না। করোনা মহামারীর ফলে নতুন যে দারির্দ্যতা, নতুন যে ঝড়ে পড়া তার প্রধান শিকার হচ্ছে নারী। এই সংকট মোকাবেলা করতে হলে রাষ্ট্রীয় পর্যায় এবং বেসরকারি পর্যায়ে কর্মসূচী গ্রহণ করতে হবে।

থার্ড জেন্ডার স¤প্রদায় থেকে নির্বাচিত দেশের প্রথম চেয়ারম্যান জনাব নজরুল ইসলাম রীতু বলেন, আমি শিক্ষিত না হলেও জনগণের সেবা কীভাবে করতে সেটা জানি। জনগণ পাশে থাকলে ভোটের সময় যুদ্ধ করা লাগে না। জনগণের ভালবাসার ফলেই আমি ভোটে জয়ী হয়েছি।
শীপা হাফিজা বলেন, সমাজে নারীরা যদিন পিছিয়ে থাকবে, মর্যাদার জায়গায় আসীন হতে পারবে না ততদিনও পুরুষরাও এগিয়ে থাকতে পারবে না।
ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, আমরা অনেক দূর এগিয়েছি, কিন্তু নারীরা এখনো বঞ্চনা, হয়রানি ও নিপীড়নের শিকার। নারীদের ওপর এই বঞ্চনা ও নিপীড়নের অবসানের লক্ষ্যেই ফোরামের যাত্রা শুরু হয়েছিল। এই বঞ্চনা থাকলে জাতীয় সঙ্গীতে উলেখ করা মায়ের বদন মলিন রয়ে যাবে। মায়ের মলিন বদনে উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনার জন্যই আমাদের এই প্রচেষ্টা। নারীর প্রতি সকল ধরনের বৈষম্যের বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। তাহলেই পথের কাটা সরে যাবে। বাংলাদেশ একটি সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *