২/২, ব্লক-এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা
৮৮০-২-৮৮০-২-৯১১

জাতীয় কন্যাশিশু দিবস-২০২৩ উদযাপন

বিনিয়োগে অগ্রাধকিার, কন্যাশিশুর অধিকার প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম-এর যৌথ উদ্যোগে উদযাপিত হলো জাতীয় কন্যাশিশু দিবস-২০২৩। দিবসটি উদ্যাপন উপলক্ষে আজ শনিবার সকাল ৯:৩০টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুইমিং পুল গেট (দোয়েল চত্বর সংলগ্ন) বরাবর পায়রা উড়িয়ে র‌্যালির শুভ উদ্বোধন করেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা, এমপি।

র‌্যালির পর সকাল ১০:৩০টায় বাংলাদেশ শিশু একাডেমী মিলনায়তনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা, এমপি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ফরিদা পারভীন, বাংলাদেশ শিশু একাডেমির মহাপরিচালক আনজির লিটন এবং জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম-এর সহ-সভাপতি শাহিনা আক্তার ডলি। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমা মোবারেক। সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম-এর স¤পাদক জনাব নাছিমা আক্তার জলি।

ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা, এমপি বলেন, স্বাধীনতার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান উপলব্ধি করেছিলেন দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠী নারীকে বাদ উন্নয়ন সম্ভব নয়। তিনি সংবিধানের ২৭ ও ২৮ অনুচ্ছেদের মাধ্যমে নারী-পুরুষের সম-অধিকার নিশ্চিত করেছিলেন, ১৯৭৪ সালে শিশু আইন প্রণয়ন করেন এবং ১৯৭৩ সালে প্রণীত পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় নারীদের উন্নয়নে নানাবিধ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছিল। তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বর্তমান সরকার নারী ও কন্যাশিশুদের কল্যাণে নানাবিধ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে।

নাজমা মোবারেক বলেন, ১৯৭২ সালে প্রণীত আমাদের আদি সংবিধানে নারী ও কন্যাশিশুদের বিভিন্নভাবে ক্ষমতায়িত করা হয়েছে। ১৯৭৪ সালে শিশু আইন পাস করা হয়, গার্লস গাইড অ্যাসোসিয়েশন এবং নারী পুনবার্সন কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছিল। বাংলাদেশ সরকার সিডও সনদ স্বাক্ষর করেছে।
ফরিদা পারভীন বলেন, বর্তমান সরকার নারীবান্ধব সরকার। সরকার নারী ও কন্যাশিশুদের কল্যাণে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। সারাদেশে কিশোরী-কিশোরী ক্লাব গঠন করা হয়েছে, ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার গড়ে তোলা হয়েছে, নারীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে, বিভিন্ন আইনের আধুনিকীকরণ করা হয়েছে।

জনাব আনজীর লিটন বলেন, বাংলাদেশ সরকার নারী ও কন্যাশিশুদের এগিয়ে নিতে চায়। এ লক্ষ্যে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। সরকারের এসব পদক্ষেপের কারণে আমাদের কন্যাশিশুরা প্রতিনিয়ত এগিয়ে যাচ্ছে। কন্যাশিশুদেরকে দেশপ্রেমিক ও মানবিক মূল্যবোধস¤পন্ন মানুষ হতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

শাহীনা আক্তার ডলি বলেন, ২০০০ সাল থেকে ফোরামের উদ্যোগে প্রতিবছর ৩০ সেপ্টেম্বর জাতীয় কন্যাশিশু দিবস পালনের মাধ্যমে মানুষকে সচেতন করে তোলার চেষ্টা করছি। জাতির সার্বিক উন্নতি নিশ্চিত করার জন্য কন্যাশিশুদের অধিকার নিশ্চিত করা, তাদের জন্য বিনিয়োগ বৃদ্ধি করা এবং সামাজিক সচেতনতা গড়ে তোলা দরকার।

নাছিমা আক্তার জলি বলেন, জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম কন্যাশিশুদের কল্যাণে নানাবিধ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে। যেমন, স্বনির্ভর করে তোলা এবং রিপ্রোডাকটিভ হেলথ বিষয়ে আমরা কন্যাশিশুদের প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকি, আমরা বাল্যবিবাহ বন্ধে তৃণমূলে কাজ করি। আমরা মনে করি, জাতির কন্যাশিশুদের অধিকার নিশ্চিত করতেই হবে, তাদের বিকাশের সুযোগ নিশ্চিত করতেই হবে, তাদের জন্য বিনিয়োগ বৃদ্ধি করতেই হবে।

অনুষ্ঠানে তিনজন কন্যাশিশু তাদের অনুভ‚তি ব্যক্ত করেন। তারা হলেন, রুম টু রিড-এর কিশোরীবন্ধু মরিয়ম আক্তার আইরিন, গুডনেইবারস বাংলাদেশ-এর তাসমিন ইসলাম সামিহা, এডুকো বাংলাদেশ-এর শান্তা আক্তার।

উলে­খ্য, অনুষ্ঠানের বিশেষ পর্যায়ে জাতীয় কন্যাশিশু দিবস উপলক্ষে আয়োজিত চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়, দিবসকে কেন্দ্র করে প্রকাশিত পোস্টার এবং কন্যাশিশু-১৮ নামের একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *