২/২, ব্লক-এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা
৮৮০-২-৮৮০-২-৯১১

সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের প্রতিবাদে জাতীয় কন্যাশিশু এডভোকেসি ফোরামের মানববন্ধন

minority_photoদেশের বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘু সমপ্রদায়ের ওপর হামলার ঘটনাসমূহের বিষয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন এবং দায়ীদের চিহ্নিত করে দ্রুত বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন সুজন-সুশাসনের জন্য নাগরিক এবং জাতীয় কন্যাশিশু এডভোকেসি ফোরাম-এর নেতৃবৃন্দ।
উক্ত মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন সুজন সম্পাদক এবং জাতীয় কন্যাশিশু এডভোকেসি ফোরামরে সভাপতি ড. বদিউল আলম মজুমদার, সুজন নির্বাহী সদস্য বিচারপতি কাজী এবাদুল হক, সুজন নির্বাহী সদস্য ডাঃ জাফরুল্লাহ চৌধুরী, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার, বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ রুহিন হোসেন প্রিন্স, সাংবাদিক আবু সাঈদ খান,  ফোরাম সম্পাদক নাছিমা আক্তার জলি, সুজন কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার, সুজন এর ঢাকা জেলা কমিটির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মুজবাহ আলীম, সুজন ঢাকা জেলা কমিটির সহ-সভাপতি আবুল হাসনাত, সাবেক ছাত্রনেতা মানবেন্দ্র দেব প্রমুখ।

মানববন্ধনে নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি যে, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গত ৫ জানুয়ারি থেকেই দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের সংখ্যালঘু সমপ্রদায়ের ওপর হামলা চালানো হচ্ছে। ভোট দেয়ার অপরাধে তাঁদের ওপর শারীরিক হামলা হচ্ছে, বাড়ি-ঘর জ্বালিয়ে দেয়া হচ্ছে, বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান লুটপাট করা হচ্ছে। ভূক্তভোগী জনগণ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য থেকে আমরা জেনেছি যে, জামায়াত-শিবির ও বিএনপি’র নেতা-কর্মী-সমর্থকরা এই হামলা চালিয়েছে। পাশাপাশি আমরা আরও জেনেছি, যশোরের অভয়নগরে হামলার এক ঘন্টা পূর্বেই হামলার আশঙ্কা প্রকাশ করে সংখ্যালঘু সমপ্রদায়ের পক্ষ থেকে পুলিশ প্রশাসন ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের সহযোগিতা চাওয়া হলেও তারা কেউ এগিয়ে আসেন নি।’

তাঁরা আরও বলেন, ‘২০০১ সালের নির্বাচনোত্তর সহিংসতায় সময়েও আমরা তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে নিষ্ক্রিয় দেখেছি।  পরবর্তীতে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ক্ষমতায় এসে ঘটনার তদন- করলেও দোষীদের বিচার করেনি। প্রকৃত অপরাধীদের বিচার না হওয়ায় সংখ্যালঘুদের ওপর যে নির্যাতন অব্যাহত রয়েছে- তাতে আমরা উদ্বিগ্ন। যে বিষয়টি আমাদের আরও উদ্বিগ্ন করে, তা হচ্ছে- গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিভিন্ন ঘটনায় ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে সম্পর্কিতদের সংশ্লিষ্টতা।’

নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘সরকারের প্রতি আমাদের আহ্বান- সংখ্যালঘু সমপ্রদায়ের ওপর হামলার ঘটনাসমূহের বিষয়ে বিচার বিভাগীয় তদন- কমিটি গঠন করুন এবং দায়ীদের চিহ্নিত করে দ্রুত বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিন। কারণ, ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু সমপ্রদায় এদেশে কারো অনুগ্রহে বসবাস করে না, এটা তাঁদের জন্মগত ও সাংবিধানিক অধিকার। প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি আহ্বান- অনাকাঙ্ক্ষিত এসকল ঘটনা প্রতিরোধে এগিয়ে এসে আইনি দায়িত্ব পালন করুন। ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল ও প্রগতিশীল রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তিসহ সচেতন সকল মানুষের প্রতি আহ্বান- আক্রান্তদের পাশে দাঁড়ান এবং এই ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে সংঘবদ্ধ হয়ে এগিয়ে আসুন। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) প্রতি আহ্বান- ধর্মান্ধ রাজনৈতিক দলসমূহের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে রাজনীতি করুন এবং আন্দোলনের নামে সহিংসতা বন্ধ করুন।’

মানববন্ধন কর্মসূচির প্রতি সংহতি জানিয়ে এতে যোগদান করেন দি হাঙ্গার প্রজেক্ট, আইন ও শালিস কেন্দ্র, নাগরিক উদ্যোগ, জাতীয় কন্যাশিশু এডভোকেসি ফোরাম এর সহযোগি সংগঠণ এএসডি, আরএসসি, গণসাক্ষরতা অভিযান, নারীমেত্রী, অপরাজেয় বাংলাদেশ, প্রথম আলো মডেল স্কুল, ডাব্ল্লিউবিবি, একলাব, হিউম্যান রাইটসৃ ওয়াচ, চাউল্ড ডেভেলপমেন্ট ফোরাম, কারিতাস বাংলাদেশ ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা পরিবার পুনর্বাসন কমিটি-এর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।