২/২, ব্লক-এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা
৮৮০-২-৮৮০-২-৯১১

জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে গোলটেবিল বৈঠক: ‘আইনের প্রয়োগ ও দরিদ্রতা নিরসন কমাবে বাল্যবিবাহের হার’

district-wise-roundtable__barishalকোনো শর্ত ছাড়াই মেয়েদের বিয়ের ন্যূনতম বয়স ১৮ বছর বহাল রেখে ‘বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন-২০১৬’ পাশ এবং বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে জাতীয় কর্ম-পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের জন্য তৃণমূলে জনমত সৃষ্টির লক্ষ্যে জেলা পর্যায়ে বেশ কয়েকটি গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করা হয়। জাতীয় কন্যাশিশু এডভোকেসি ফোরাম-এর উদ্যোগে এবং প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-এর সহযোগিতায় উক্ত গোলটেবিল বৈঠকগুলো অনুষ্ঠিত হয়। ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৬, বরিশাল জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজন করা হয় এমন একটি গোলটেবিল বৈঠক। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার নুরুল আলম। সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক ড. গাজী মো. সাইফুজ্জামান। অন্যান্যের মধ্যে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আবুল কালাম আজাদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) কাজী হোসনেয়ারা এবং জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা রাশিদা বেগম। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন দি হাঙ্গার প্রজেক্ট-এর আঞ্চলিক সমন্বয়কারী জনাব মেহের আফরোজ মিতা।

মো. নুরুল আলম বলেন, ‘যারা বাল্যবিবাহে ইচ্ছুক, তারা যে কোনো উপায়ে জন্মনিবন্ধন করে মেয়ের বয়স বাড়িয়ে নেয়। ফলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়াও কঠিন হয়ে পড়ে। কতিপয় কাজীও শিশুদের বয়স বেশি দেখিয়ে বিয়ে দিতে বর ও কনে পক্ষকে সহায়তা করে। তাই ইতিমধ্যেই সরকারের পক্ষ থেকে কাজীদের এ বিষয়ে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।’ এছাড়া বিবাহ রেজিস্ট্রারদের ইউনিয়ন পরিষদে বসে তাদের কার্যক্রম পরিচালনার জন্যও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

ড. গাজী মো. সাইফুজ্জামান বলেন, ‘সাধারণত মেয়েদের অর্থনৈতিক অবস্থার দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে বাল্যবিবাহে উৎসাহিত করে ছেলেদের পরিবার। কখনো কখনো তাড়াতাড়ি বিয়ে দেয়ার প্রবণতা থেকেও বাল্যবিবাহের দিকে ঝুঁকে পড়ে গ্রামীণ পরিবার এবং অশিক্ষার আবর্তে থাকা শহুরে বস্তি এলাকায় বসবাসকারী পরিবারগুলো। এছাড়া দুষ্টু প্রকৃতির ছেলেদের উত্ত্যক্তের কারণেও বাল্যবিবাহ হয়ে থাকে। উল্লেখযোগ্য এ কারণগুলো ছাড়াও আরও অনেক সামাজিক ও অর্থনৈতিক কারণে বাল্যবিবাহ হয়ে থাকে। জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা বন্ধে রোল মডেল তৈরি-সহ বেতার, টেলিভিশনে বাল্যবিবাহের কুফল সম্পর্কে বিভিন্ন ধরনের প্রচারণা এবং প্রত্যন্ত এলাকার মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির কোনো বিকল্প নেই।’ বাল্যবিবাহ নিরোধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে পারলেই এক্ষেত্রে সাফল্য আসবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

কাজী হোসনেয়ারা চরম দারিদ্র্য ও ক্ষুধা নির্মূল করতে পারলে বাল্যবিবাহ বন্ধ করা সহজ হবে বলে অভিমত প্রকাশ করেন।

district-wise-roundtable__coxsbazarবরিশাল সদর উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা নাসরিন আক্তার-এর সঞ্চলনায় অনুষ্ঠানে মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা পঙ্কজ রায় চৌধুরী, সুজন-সুশাসনের জন্য নাগরিক বরিশাল জেলা সভাপতি আক্কাস হোসেন, বরিশাল প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি এস এম ইকবাল, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব কাজল ঘোষ, প্ল্যান ইন্ট্যারন্যাশনাল বাংলাদেশ-এর বিভাগীয় ব্যবস্থাপক শাহরুখ সোহেল এবং জাতিসংঘ শিশু তহবিল (ইউনিসেফ) বরিশাল কার্যালয়ের যোগাযোগ কর্মকর্তা সানজিত কুমার প্রমুখ।

এছাড়াও ২২ ডিসেম্বর ২০১৬ কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলায়, ০৭ ডিসেম্বর ২০১৬ কুমিল্লা জেলার নাঙ্গলকোট উপজেলায়, ২৭ ডিসেম্বর, ২০১৬ হবিগঞ্জে, ০৮ ডিসেম্বর ২০১৬ যশোরে, ২১ ডিসেম্বর ২০১৬ ঝালকাঠিতে, ১০ ডিসেম্বর ২০১৬ খুলনায়, ২০ ডিসেম্বর ২০১৬ মাদারীপুরে, ০৬ অক্টোবর ২০১৬ ময়মনসিংহে, ০৪ ডিসেম্বর ২০১৬ নাটোরে, ০৩ অক্টোবর ২০১৬ রাজশাহীতে, ০৮ ডিসেম্বর ২০১৬ রংপুরে এবং ১৮ ডিসেম্বর ২০১৬ টাঙ্গাইলে গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।